December 23, 2024, 12:12 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
আদালতে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দু’টি ধারায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে মোট আট বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৬ ধারায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ২৯ ধারায় তিন বছর কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। এ দুই ধারায় মোট আট বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫ লাখ অর্থদণ্ড হয় ওসি মোয়াজ্জেমের। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর পৌনে তিনটার দিকে বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম শামীম বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ২০ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গত ২৭ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা ১২৩ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালে। এরপর বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। গত ১৬ জুন দুপুরে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরদিন ১৭ জুন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলায় নুসরাতের বক্তব্য গ্রহণের সময় তা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে। যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিডিওতে ধারণ এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। পরে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসার কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে পাশের বহুতল ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯ টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।